পথের পাঁচালী
TK. 350 Original price was: TK. 350.TK. 300Current price is: TK. 300.
Categories: চিরায়ত উপন্যাস
Edition: ১ম সংস্করণ , ২০০৯
Language:BANGLA
Publisher: অ্যাডর্ন পাবলিকেশন
Country: বাংলাদেশ
Description
ভূমিকা
পথের পাঁচালী মুখ্যত শিশু অপুর বড়ো হয়ে ওঠার কাহিনি। যে পথ দিয়ে জীবনে সে অগ্রসর হয়েছে, যেসব মানুষের সংস্পর্শে সে এসেছে, তা সেই কাহিনির অবিচ্ছেদ্য অংশ। এর পটভূমিটি সুবিস্তৃত। পূর্বপুরুষ ঠ্যাঙাড়ে বীরু রায়ের উপাখ্যান যদিও দূর ইতিহাসের অঙ্গীভূত, কৌলীন্যপথার অমানবিক যন্ত্রে পিষ্ট ইন্দির ঠাকরুণের জীবনের ইতিহাস অত সুদূরের নয়। ইন্দির ঠাকরুণের প্রতি সর্বজয়ার আচরণ সবসময়ে মানবিক নয়। যে-মা দূর্গা ও অপুর জীবনে উঁচু আসনে প্রতিষ্ঠিত, পিসির প্রতি তার রূঢ় ববহার তাদের জীবনের প্রাথমিক অভিজ্ঞতার অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে। উপন্যাসের পরবর্তী অংশ অপু-দূর্গা ও অপুর-দুর্গার শৈশবকাহিনি- সে কাহিনি অভিনবত্বে অসাধারণ নয়, কিন্তু মাধুর্যে পরিপূর্ণ। তারা দুজনেই গ্রাম্য প্রকৃতিকে ভালোবাসে, রেলপথ তাদের কাছে এক রহস্যজগতের বার্তা পৌঁছে দেয়। নতুন নতুন অভিযানে দুর্গা অপুর পথপ্রদর্শক, তবে অপুর মধ্যে অনুভূতির যে প্রখরতা এবং ভাবুকতার যে দোলা লক্ষ করা যায়, দূর্গার মধ্যে আমরা তা দেখি না। তবু চরিত্র হিসেবে এরা কেউই আদর্শায়িত নয়, প্রলুব্ধ দুর্গা চুরি করতেও কুণ্ঠিত হয় না- সে চুরির চিহ্ন মুছে দিতে অপু পরে তৎপর হয়, ততদিনে অবশ্য দুর্গা আর নেই। দুর্গার মৃত্যু অপুর জীবনে বড়োরকম আঘাত হানে, তার অভ্যস্ততায় ছেদ টানে , কিন্তু তা অপুর স্বাধীন বিকাশ ও সৃষ্টিশীলতার পথও উন্মুক্ত করে দেয়। এরপর কাহিনি একান্তই অপুর।
পথের পাঁচালী মুখ্যত শিশু অপুর বড়ো হয়ে ওঠার কাহিনি। যে পথ দিয়ে জীবনে সে অগ্রসর হয়েছে, যেসব মানুষের সংস্পর্শে সে এসেছে, তা সেই কাহিনির অবিচ্ছেদ্য অংশ। এর পটভূমিটি সুবিস্তৃত। পূর্বপুরুষ ঠ্যাঙাড়ে বীরু রায়ের উপাখ্যান যদিও দূর ইতিহাসের অঙ্গীভূত, কৌলীন্যপথার অমানবিক যন্ত্রে পিষ্ট ইন্দির ঠাকরুণের জীবনের ইতিহাস অত সুদূরের নয়। ইন্দির ঠাকরুণের প্রতি সর্বজয়ার আচরণ সবসময়ে মানবিক নয়। যে-মা দূর্গা ও অপুর জীবনে উঁচু আসনে প্রতিষ্ঠিত, পিসির প্রতি তার রূঢ় ববহার তাদের জীবনের প্রাথমিক অভিজ্ঞতার অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে। উপন্যাসের পরবর্তী অংশ অপু-দূর্গা ও অপুর-দুর্গার শৈশবকাহিনি- সে কাহিনি অভিনবত্বে অসাধারণ নয়, কিন্তু মাধুর্যে পরিপূর্ণ। তারা দুজনেই গ্রাম্য প্রকৃতিকে ভালোবাসে, রেলপথ তাদের কাছে এক রহস্যজগতের বার্তা পৌঁছে দেয়। নতুন নতুন অভিযানে দুর্গা অপুর পথপ্রদর্শক, তবে অপুর মধ্যে অনুভূতির যে প্রখরতা এবং ভাবুকতার যে দোলা লক্ষ করা যায়, দূর্গার মধ্যে আমরা তা দেখি না। তবু চরিত্র হিসেবে এরা কেউই আদর্শায়িত নয়, প্রলুব্ধ দুর্গা চুরি করতেও কুণ্ঠিত হয় না- সে চুরির চিহ্ন মুছে দিতে অপু পরে তৎপর হয়, ততদিনে অবশ্য দুর্গা আর নেই। দুর্গার মৃত্যু অপুর জীবনে বড়োরকম আঘাত হানে, তার অভ্যস্ততায় ছেদ টানে , কিন্তু তা অপুর স্বাধীন বিকাশ ও সৃষ্টিশীলতার পথও উন্মুক্ত করে দেয়। এরপর কাহিনি একান্তই অপুর।
জীবন ও প্রকৃতিকে অপু অবলোকন করেছে অপরিসীম বিস্ময় ও গভীর মুগ্ধতার সঙ্গে । অপুর দুই পা বাস্তব পৃথিবীতে প্রোথিত, কিন্তু তার দু-চোখে রোমান্সের অঞ্জন। স্বভাবসিদ্ধ কল্পনাপ্রবণতা ও তীক্ষ্ণ সৌন্দর্যনুভূতির গুণে সে মানুষের মধ্যে যে বিজন মহত্ত্ব অনুভব করে এবং প্রকৃতির মধ্যে যে ঐন্দ্রজালিক মোহনীয়তার সন্ধান পায়, অন্যের কাছে তা সহজে ধরা দেয় না। আমরা যে শ্রীহীন গ্রামকে জানি, যে দারিদ্রপীড়িত মানুষকে চিনি, যে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন হই, এখানে তার সবই অন্যরকম শ্রী, অন্যরকম শক্তি, অন্যরকম অবয়ব নিয়ে ধরা পড়ে। বস্তুর রূপকে ভেদ করে স্বরূপের উপলব্ধি অপুর দৃষ্টিভঙ্গির বড়োকথা। এই দৃষ্টিভঙ্গিসঞ্জাত বলে ঔপন্যাসিকের আত্মস্মৃতিমূলক এই উপন্যাস এমন মোহনীয় হয়ে উঠেছে।

