বাংলা সাহিত্যের শাশ্বত ঔপন্যাসিকগণের কালজয়ী উপন্যাস সমগ্র
TK. 600 Original price was: TK. 600.TK. 480Current price is: TK. 480.
Categories: উপন্যাস সমগ্র
Edition: ১ম প্রকাশ, ২০২৪
No Of Page: 416
Language:BANGLA
Publisher: এশিয়া পাবলিকেশন্স
Country: বাংলাদেশ
বামুনের মেয়ে : জাতিভেদ প্রথা, অন্ধবিশ্বাস আর কুসংস্কার মানুষের জীবনটাকে কিভাবে বিষাদময় করে তোলে, তারই উপমা দিয়েছেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় “বামুনের মেয়ে” উপন্যাসে।
আত্মহত্যার অধিকার : বর্ষাকালেই ভয়ানক কষ্ট হয়। ঘরের চালটা একেবারে ঝাঁঝরা হইয়া গিয়াছে। কিছু নারিকেল আর তাল-পাতা মানসম্রম বজায় রাখিয়াই কুড়াইয়া সংগ্রহ করা গিয়াছিল। চালের উপর সেগুলি বিছাইয়া দিয়া কোনো লাভ হয় নাই। বৃষ্টি নামিলেই। ঘরের মধ্যে সর্বত্র জল পড়ে। বিছানাটা গুটাইয়া ফেলিতে হয়, ভাঙা বাক্সপেটরা কয়টা এ কোণে টানিয়া আনিতে হয়, জামাকাপড়গুলি দড়ি হইতে টানিয়া নামাইয়া পুঁটলি করিয়া, কোথায় রাখিলে যে ভিজিবে কম, তাই নিয়া মাথা ঘামাইতে হয়। বড় ছেলেটা কাঁচা ঘুম ভাঙিয়া কাঁদিতে আরম্ভ করে। আদর করিয়া তাহার কান্না থামানো যায় না, ধমক দিলে কান্না বাড়ে। মেয়েটা বড় হইয়াছে, কাঁদে না; কিন্তু ওদিকের দেয়ালে ঠেস দিয়া বসিয়া এমন করিয়াই চাহিয়া থাকে যে নীলমণির ইচ্ছা হয় চড় মারিয়া ওকেও সে কাঁদাইয়া দেয়। এতক্ষণ ঘুমাইবার পর এক ঘণ্টা জাগিয়া বসিয়া থাকিতে হইল বলিয়া ও কী চাহনি? আকাশ ভাঙিয়া বৃষ্টি নামিয়াছে, ঘরের চাল সাত বছর মেরামত হয় নাই। ঘরের মধ্যে জল পড়াটা নীলমণির এমন কী অপরাধ যে মেয়েটা তাকে ও-রকম ভাবে নিঃশব্দে গঞ্জনা দিবে? ছোট ছেলেটাকে বুকের মধ্যে লুকাইয়া নিভা একবার এধার একবার ওধার করিয়া বেড়াইতেছিল। হঠাৎ বলিল, ওগো, ছাতিটা একবার ধরো, একেবারে ভিজে গেল যে! লক্ষ্মী, ধরো একবার ছাতিটা খুলে। ওরও কি শেষে নিমুনিয়া হবে? নীলমণি বলিল, হয়তো হবে। বাঁচবে।
দুই বোন : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্তৃক বাংলা ভাষায় রচিত একটি উপন্যাস। এটি ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয়। এটি পরকীয়া সম্বন্ধীয় একটি মিলনান্তক উপন্যাস।
শর্মিলা ও ঊর্মিমালা দুই বোন। শর্মিলার স্বামী শশাঙ্কের সঙ্গে ঊর্মিমালার ঘনিষ্ঠতা তাদের সকলের জীবনে যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল তারই নাটকীয়তাময় রূপায়ণ এই উপন্যাসে পরিলক্ষিত হয়। উপন্যাসটিতে পুরুষের পক্ষে দুই নারীকে দুইভাবে ভালোবাসার ফলে জটিলতার সৃষ্টি হয় আর নারীর পক্ষে সেই জটিলতার সমাধান দেখানো হয়েছে।
দৃষ্টি প্রদীপ : এই উপন্যাসের নায়ক জিতু। জিতু এক ব্যতিক্রমধর্মী চরিত্র। এই উপন্যাসে জিতু তার বড় ভাই নিতাই ও বোন সীতাসহ তার পরিবারকে দেখা যায় দার্জিলিং-এ। সেখানে তাদের সাথে মিস নর্টন নামের এক খ্রিস্টান ধর্মপ্রচারক মহিলার পরিচয় হয়। সেখানে তাদের বেশ ভালো কাটলেও জিতুর বাবার চাকরি চলে যাওয়ার দরুন তারা আটঘরায় তাদের জ্যাঠামশায়ের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। তবে সেখানে জিতুর পরিবারের উপর কেউ বিশেষ খুশি ছিল না। এখানে জিতুর জ্যাঠাইমার উদ্ধত ধনগর্ব ও শুচিতার অহংকার দেখা যায়। জিতু কিছুটা বড় হলে সে শৈলদিদির বাসায় থেকে পড়াশোনা করে এবং সেখানে তার সাথে ছোট বৌঠাকরুনের পরিচয় হয়। এর কিছুকাল পর জিতু কলকাতায় নীলাম্বর রায়ের বাড়িতে চাকরি পায়। তবে সে বেশিদিন ঐ জায়গায় চাকরি করে না। এরই মাঝে জিতুর অমতে এক বিপত্নীক লোকের সাথে সীতার বিয়ে দেয় জিতুর জ্যাঠামশায় এবং নিতাই বিয়ে করে। এর কিছুদিন পর জিতুর মা মারা যায়। জিতু কিছুসময় দাদার সাথে কাটিয়ে ঘুরতে ঘুরতে দ্বারবাসিনী গ্রামে এক আখড়াবাড়ির সন্ধান পায়। এখানকার বৈষ্ণবী মালতীর সঙ্গে জিতুর একধরনের সম্পর্ক গড়ে ওঠে